আজ বুধবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঈদে জামিন প্রত্যাশীদের কারাফটকে উপচে পড়া ভিড়

সংবাদচর্চা রিপোর্ট : ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। তাই ঈদের এই আনন্দকে আরো প্রাণবন্ত করার জন্য সবাই একসাথে মিলিত হয়। তবে নানা কারনে অনেকেই ঈদের আনন্দকে ভাগ করে নিতে পারে না। প্রিয় মানুষটি দীর্ঘ দিন ধরে দূরে থাকে। তবে ঈদ এলেই মনের মানুষটিকে সবাই কাছে পেতে চায়। কাছে পাওয়ার প্রত্যাশায় স্বজনদের আহাজারি দেখাযায়। অপরদিকে ঈদের এই আনন্দকে আরো প্রাণবন্ত করার জন্য জামিন প্রাপ্ত স্বজদের কারাফটকে উপচে পড়া ভীড় চোখে পড়ার মত। কখন কারাগারের ঐ ফটক থেকে বের হয়ে আসবে আপন মানুষটি। শুধু অপেক্ষার পালা। আর এজন্য দুপুর থেকেই কারাফটকে ভিড় রয়েছে স্বজদের। দৈনিক সংবাদচর্চার একটি টিম কারাফটকের সামনে গেলে এমনই একটি দৃশ্য চোখে পরে। আর এনিয়ে কথা হয় স্বজন ও জামিন প্রাপ্ত আসামীদের সাথে।

কারাফটকের সামনে দাড়িয়ে থাকা এক স্বজন বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘ ৩ বছর ধরে বিনা কারনে কারাগারে রয়েছেন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল একদিন নির্দোষ হয়ে আমার স্বামী বের হয়ে আসবে। সেই দিন আজ এসেছে। তাই স্বামীকে ফিরে পেতে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছি। আমার স্বামীকে কখন দেখতে পারবো। শুধুই অপেক্ষার পালা।
জাহিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার ভাই দুই মাস ধরে কারাগারে। চিন্তায় ছিলাম কবে আমার ভাইকে জামিনে বের করবো। রাত পোহালেই ঈদ। ঈদে ভাই কারাগারে থাকলে পুরো পরিবারের ঈদ মাটি হয়ে যাবে। তাই অনেক কষ্টের বিনিময়ে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এনেছি। ভাইকে নিতে পরিবারের সবাই কারাফটকে হাজির হয়েছি। ভাইকে অনেকদিন পর কাছে পাব এটা যে কত আনন্দের তা বলে শেষ করা যাবে না।

কারাফটকে দাড়িয়ে থাকা আরেকজনের সাথে কথা বললে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে নিকট আত্মীয় মামলা দিয়েছে। আর সেই মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে আমার পিতা কারাগারে রয়েছেন। পিতা জামিনে ছাড়া পেয়েছে। তাই বাবার জন্য সবাই পথ চেয়ে আছি। তিনি বলেন একদিন পর ঈদ কখনও বাবাকে ছাড়া ঈদ করিনি। বাবাকে নিয়ে ঈদ করতে পারবো বলে আমরা সবাই আনন্দিত।

জামিনে প্রাপ্ত লামারবাগের আলম বলেন, জুট সন্ত্রাসী আজমত গেসুর মিথ্যা মামলায় কয়েকদিন ধরে কারাগারে ছিলাম। জামিন পেয়ে নিজেকে খুব আনন্দিত লাগছে। আর দুইদিন পরেই ঈদ। জামিন না পেলে হয়তো ঈদ আনন্দ হত না। তাই এ জামিনে আমি ও আমার পরিবার সবাই আনন্দিত।

এসময় জামিন পাওয়া আরেক জন বলেন, গত বছরের ঈদ কারাগারে করতে হয়েছে। স্বজনদের সাথে ঈদ না করাটা কত যে কষ্টের তা অনুধাবন করেছি। মনে হয়েছে আমি পৃথিবীর মধ্যে একা। তবে এই ঈদ পরিবার পরিজনদের নিয়ে করতে পারবো বলে নিজের মধ্যে খুব আনন্দ লাগছে। আর স্বজনদের সামনে পেয়ে অতীতের সব দু:খ ভুলে গেছি।